একটু তোরে ছুঁই

যদি আমার পাশে না থাকো কখনো কোনদিন,
যদি জীবনের রং খুঁজতে খুঁজতে কখনও বেড়ে যায় দুরত্ব,অসীম।
আমাদের একদা কাছে থাকার সেই রঙ্গীন ইচ্ছের ঘুড়ি
যদি বিচ্ছিন্ন হয় প্রতিশ্রুতির নাটাই থেকে,
যদি হারিয়ে যায় সীমাহীন কালের আকাশে,
তবু আমি ছুটতে পারব না ছেড়া সূতোর সন্ধানে।
প্রিয় নাটাই হাতে বসে থাকব না করিডোরে, উঠোনের কাজ ফেলে।

মনে পড়ে ? তোমার সেই কোন এক কৈশোরে
ভালবাসার নাকচাবি সহসা আটকেছিল এক ফুলের মত ভুল কাঁটায়,
তারপর কেবলি অপেক্ষা,অন্ধকারে।
কত বিনিদ্র আর গাড় ছিল অপেক্ষার সে প্রহর,মনে পড়ে তোমার ?
তখন তারকাটায় কত পেইন্টিং ঝুলত অহর্নিশ।হয়ত এখনো ঝোলে।
মাঝে মাঝে বাতাস এসে নাড়া দেয়,স্মৃতির ধুলো খসে পরে টুপটাপ।আবার জমে।
তবু তুমি থেমে থাকোনি,একা।
চলতে চলতে অনেক জমেছে খুচরো সিকি আধুলি,আর রংহীন ধুলোবালি।
তবু জীবন মানে-
সহসা সাইকেল থেকে নেমে গলির মুখে মুদিদোকানে খুচরো কেনা বেচা নয়।অন্যকিছু।

তোমার আর কখনই ফেরা হবেনা পুরোনো সে পথে অথবা সেই ভুল ঠিকানায়।
যেখানে টান আর দোটানায় ঝুলেছিল অনেক স্বপ্নের কৈশোর।
অথবা তোমার প্রিয় সেই বকুল গাছটার কাছে,
মাঠ আর জল কাঁদার কাছে,রাস্তার বড় মোড়টার কাছে,
অথবা সেই পুকুরটার কাছে,
যার টল টলে জলের দিকে তাকলে তোমার প্রিয় মানুষটার মুখ ভেসে উঠত।
কখনও পুকুরের জলে,কখনও হৃদয়ে।
জল আর হৃদয় তখন মিশে যেত,ভেসে যেত অনাদি স্রোতে।

ওরা সবাই মনে রাখবে তোমারে ভালবেসে, কথাতো তো এমনই ছিল।
সহসা কোন ঝড় বলে গেলো কানে কানে,
সব কথা উড়েছে হাওয়ায়, ভেসে গেছে নোনা জলে।
যে ভুল ভালবাসা দিয়েছিল তোমারে প্রেম হীন প্রিয় অন্ধকার,
আর থেমে যাবার মুল মন্ত্র,মোহ মুক্তির সে ক্ষন আজ অনেক পেছনে।
এখন ধোঁয়ার গন্ধ আর ঝাপসা কেবলি তার গায়ে।
তবু কোথায় কোন শিরায় লুকোনো ছিল প্রেমের আদি ভ্রুনো।তোমার আমার।
জন্ম আর মৃত্যুর মাঝামাঝি রয়েছে সে চিরকাল।বিরহ বিহীন।

আজন্ম আজলা আজলা ভালোবাসায় ক্লান্ত তুমি,তবু
তোমার ঝুল বারান্দায় সকালের রোদ হয়ে অপেক্ষায় রব,
ভেজা কাপড় মেলতে এসে দেখা হবে।
আলতো হাসি থাকবে চিবুক ঘেঁষে,দেখব প্রতিদিন
স্নিগ্ধ আর আলগা সুতোর নরমআবেশ অনেক্ষন,রবে পলক হীন।
ভেজা চুলের করিডোর থেকে মাত্র পলক দুর,ভেজা পাহাড়ের পাদদেশ।
শুন্যে অদুরে তাকানো উদাস দুচোখ স্থির রবে,
মন শুধুই খুঁজবে আমারে,ক্রমাগত আমার বিচরনের নিশানা।
জানি শরীর উষ্ণ হলেও তুমি আমায় আটকাবেনা।যেন-

রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশবো আমি, বিভোর হবি তুই।
কোথায় রে তুই আয়না কাছে,একটু তোরে ছুঁই

সকালের সোনা রোদ ।দিনের শুরুটা এমনি হোক।
সন্ধ্যে হলে ছাদের উপর আমি দুরন্ত বাতাস হব।
অপেক্ষায় থাকবে সন্ধ্যার আলোছায়া।

দিনের ক্লান্তি ঘরে ফেলে,অলস পায়ে ত্রস্ত আগমন।।আমি ঢেউ হব।
নিঃশ্বাস বন্ধ রেখে আমি সমস্ত বেগে ঝাপটাবো,আছড়ে পড়ব তোমার মাঝামাঝি,
নিজেকে সামলে পাগল দিয়ে শুরু হবে গোপন আলাপ।
আমি তোমার আভুষন সাহসী করনে নিমগ্ন হব,ভাঁজে ভাঁজে,
টবের সমস্থ ফুলগুলো উছিলা খুঁজবে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখার
আমাদের নিয়ত শৃঙ্গার।

অপর্যাপ্ত ডাল আর পাতা কথা বলবে পর্যাপ্ত আড়াল সৃষ্টি নিয়ে ।
গোপন অভিসার কে আরও গোপনীয় করে তুলতে।ওরা তৎপর থাকবে।
দিনের আলো দ্রুত ফিকে হবে কাজ আছে বলে।
কাল সকালে যে কুড়ির কথা ছিল ফোটার,এখনি ফুটতে চাইবে সে
তবে আমি কেবল তোমার তৃপ্তি নিয়েই ভাববো।

না দুপুরে নয়,
দুপুরে আমি ভালবাসতে পারিনা।ডালপালা অসাড় হয়ে থাকে।
সীমাহীন বিসন্নতা আমাকে ঘিরে ধরে,পাঁজোর গুলো সরে যায় একে অন্যের থেকে,
ভীষন ফাঁকা,যেন চৈত্রের মধ্যাহেৃ পিচঢালা বাহনহীন কোন এক প্রশস্থ পথ।
কে যেন আমার প্রান আটকে রাখে আমার বুকের খাঁচার অপর্যাপ্ত পরিসরে,
প্রতিদিন দুপুরবেলা।না আমি পৌছতে পারব না।

নিয়তির জালে জড়িয়ে থাকা দুপুরের তুমি যেন আমার নয়,
শরীর ও অশরীরি ভাষা না বোঝার মত। অচেনা।
আমি যতবার তোমাকে ছুঁই,তুমি ভেঙ্গে পড়ো,
রুপকথার কোন এক পুরোনো রাজবাড়ীর মত তোমার দেহ,প্রানহীন।
চুন আর সুরকির মতো ভেঙ্গে পড়ে ঝুপঝাপ।



No comments: