প্রিয়তম মেঘ,এখন ভীষন ঘুমে অাছ তুমি। যেন আজ অনন্তকাল ধরে চলেছে তোমার ঘুম বিলাস।ঘুম ছুয়ে থাক তুমি হে নশ্বর।তোমার ভিতর যে অামিটা নিভৃত অাছে তাকে নিয়ে অাজ মধ্য রাতে অামি যাব বহুদুর ..বহুদিন অাগের এক অনাদর গায়ে যেখানে জলতলার উপর ছিল একটি বৃহত পত্র। যেন কোন এক অসীম জল রাশির উপর খসে পড়া একটি সাজানো বৃক্ষপত্র। সেথা অামরা অসহায় দুটি ভার হীন প্রান অাশ্রয় নিলাম এক অন্ধকার রাতে অালো হাতে।অাকাশে সেদিন ঝড় ছিল না। ভুমিতে জলরাশি ছিলনা উত্তাল।তবু অামাদের ভ্রমনপত্র দুলেছে অামাদের উথাল ঢেউয়ে। তবু কি অস্বাভাবিক মোহময় আর কোমল সে দোল। অামারা ভয়ে নয়, জড়িয়ে নিয়েছি পরম নির্ভয়ে...অনন্ত আনন্দে বহুবার।মন কেঁদেছে কেন এ ঝড় চিরস্থায়ী নয় এ শংকায়।কেন এ ঝড় পুর্বে আঘাত হানেনি আমাদের অন্তরিক্ষে। সেদিনও তুমি গভীর সুখে ঘুমিয়ে ছিলে। অামি ঘুম হীন চোখে তাকিয়ে দেখেছি সারা রাত তোমার ঘুমন্ত মুখ।খুঁজেছি হাসি কষ্ট আর না পাওয়ার শিররেখা শিথিল মুখের প্রতিটা ভাঁজে ভাঁজে । তোমার ঘুম শরীরে সারারাত তোমার অভিমানি একাকিত্ব দেখেছি। দেখেছি না ফোঁটা লাবন্য তোমার।কোন এক ভোরে যেন পড়ে থাকা স্বচ্ছ শিশির।বাঁকা ঠোঁটের ধার জুড়ে স্মিত উললাস দেখেছি তোমার মোহময় তনুতে. সে সব চকিতে খেলেছে তোমার কোমল শরীরে ।
জানো কতবার হাটঁতে হাঁটতে দেখেছি কি অসীম প্রেমে একটি নক্ষত্রের পানে তোমার নিমগ্ন ছুটে চলা।অবিরল ভালবাসায় সে মগ্নতা অামার দৃষ্টি এড়ায়নি। অতি ছোট তাঁরা তখন অামি,মিট মিট জ্বলি একা যেন কোন এক গায়ের আকাশের এক পাশে তুমি হীন বড় বেশী অভিমান আর অবহেলায় । বড় বেশী ভালবাসাময় তোমার সে কেন্দ্র মুখি অভিযাত্রা।ছোট ছোট ঢেউ বুকে নিয়ে কি বিশাল সে অনুরনন জীবনের গাযে।তোমার স্বপ্নময় পদযাত্রা।অাহ যদি পারতাম তোমার গন্ত্যব্যে তোমার অধিষ্ঠান নিশ্চিত করতে।তোমার দেবতার হাত ধরে যদি অারম্ভ হোত তোমার একান্ত আবাহন। তোমার জীবন সহজতর হোক কাটুক অাবর্ত সে যে কোন ঘুর্নিঝড়ের।অামি না হয় সে কয়টা দিন একাগ্র শিথিল রব।তোমার ঘুমের ভাঁজে ভাঁজে সে সব ছিল আমার মঙ্গল প্রার্থনা। সে হয়ত অামার ভিতরকার এক অন্য অামি।এই আমি নই।তার সাথে অামার যোগ অতি সমান্য। অামার সেই অামি অতি ক্ষুদ্র, নগন্য,যেন ভগনাংশ। অথচ মনে হয় হয়ত সেইই একমাত্র প্রকৃত, সঠিক আমি। অার এই যে দেখছ আমাকে, এই অামি শুধুই প্রেমিক। ভুল আর ভালবাসায় পায়ে চলা অপুর্ণ পথিক, বুকে যার লোভ মোহ আর অজস্র তৃষ্ণার পাহাড়ী ঝরনা,সম্মুখে যার কেবলি স্বপ্নহীন প্রেম, অধিকার হীন মুগ্ধতা আর এই তুমি।ভালবাসার আচড়ে তার গায়ে কেবলি প্রত্যাশার চাদর।

ঘুমঘোর তখনো ছিল ,তুমি তখনো জেগে ওঠোনি ,অলস জড়ানো চোখ তখনো দেখিনি অামায়।অামি অার অামার প্রেম জেগেছিল তখনো তোমার সমস্থ সীমানা ঘিরে। প্ররতিদিনের মত ভোর ডেকেছে আমায় ।নিয়ে গেছে খুব কাছে। তবু তোমা হতে পারেনি সরাতে।শোন ভোর অাজ দুজন অামরা তোমার হবো।সেই অামাদের জীবনের প্রথম ভোর। পথের এখনো বাকি। ঝড় তখনো বাকি ছিল। অামি সুরের সাধনা ছেড়েছি বহুকাল।শুন্যতায় হেলান দিয়ে তুমি সাধলে প্রিয়তম বাঁজাও ,নাও বীনা বাহু তুলে। সুর তোল প্রানে দেহে মনে।মমতায় অামি ছুয়েছি বীনা, তুলেছি টংকার, টানা রাগ শেষ হল সেই ভৈরবীতে। সবশেষে পড়ে রইল শুধু আমাদের মুগ্ধ দৃষ্টি, ঠোটের মুগ্ধতা, সুখের আস্তরন, আর রাশি রাশি রজনী গন্ধার ঘ্রান।অামি ছুইয়েছি না বীনার তার আমাকে ছুয়েছে ভেবেছি অজস্রবার।তুমি নও শুধু,আমি নই শুধু অবাক হয়েছে সময়। কত বড় ভুল ছিল তার, খুজেছি সেই অালোতে আমি একা এ আমি কোন আমি ? এ কোন অচেনাআমি। হাজার বছর কি তবে প্রানময় এ বীনার অপেক্ষায় কেটেছে আমার রিক্ততা ? আমি এ কেমন করে এলাম আমার প্রানের পাড়ে। এতটা ঘোর কেন ছিল প্রতি সুরে। অবশেষে আকাশময় ছড়াল সে সুধা রাতের বাতাসে।
আচ্ছা আজ তুমিই বলো চোখে চোখ রেখে .. আমরা আমাদের মনে হয়নি তোমার বলো? তোমার কি মনে হয়নি আমরা জন্মেছি শুধু আমাদের হয়ে। শোন মেঘ আমি তোমাকে রেখে ফিরবনা আর। এই বায়ুমন্ডল আমি পারবনা একা পেরোতে। মানুষ না হই পাখির পালকের মত ভেসে রব বাতাসে দুজন। অথবা কোন এক গাছের প্রিয় পাতা হয়ে অক্সিজেন কুড়োতে কুড়োতে ঝরে যাব এক সাথে কোন এক বিকেলের এলোমেলো বাতাসে। চলো ফিরি, তোমার প্রান হীন শরীর পড়ে আছে বিছানায়।তোমার অপেক্ষায়। ফিরিয়ে দিই প্রান তোমাকে তোমার খাচায়। আমি বসে রব প্রান হয়ে কাছাকাছি ,কোন এক নতুন ভোরের অপেক্ষায়।
No comments:
Post a Comment